বাংলা লাভ স্টোরি এই যে শুনুন?



--এই  যে শুনুন?
----আমাকে বলছেন।
----জি আপনাকে বলছি।
----আমি কী আপনাকে চিনি?
----জি না।
----তাহলে আপনার কথা কেন শুনবো আমি?
----না মানে,আসলে আমি যদি কথাটা না
বলতে পারি তাহলে আজ রাতে আমি
মারাও যেতে পারি। এর জন্য দায়ী
থাকবেন আপনি।
----আজিব কথা বার্তা,মারা যাবেন কেনো
আর আমিই বা দায়ী থাকবো কেনো?
----যাতে দায়ী না থাকেন তাই তো কথাটা
বলতে চাচ্ছি।
----আচ্ছা বলুন কী বলবেন?
----আসলে আমি আপনাকে ভালবাসি।
----ও এই ব্যাপার।
----জি মানে,
----থাক এতো মানে মানে করা লাগবে
না,নাম্বার টা তুলুন,০১৯১০****৭৭,রাতে ফোন
দিয়েন।
কথাটা বলেই অধরা চলে গেলো।
.
এতো দেখি মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।প্রেম
করা যে এতো টা সহজ জানতাম নাতো।
এতো দিন কেন যে এতো ভয় পাইছি।আচ্ছা
অধরা যে নাম্বার টা দিয়ে গেলো এটা
আবার ওর bf এর নাম্বার না তো।আল্লাহ
রহ্মা করো যাতে হাত পা ঠিক থাকে।
.
আরে হ্যা আপনাদের তো বলাই হয়নি এই
মাত্র যাকে প্রপোজ করলাম ওর নাম
মাহবুবা জান্নাত অধরা,মেডিকেলে
পড়াশোনা করে।আর আমি রাহাত
ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারে পড়াশোনা করি।
দুজনেই ঝিনাইদহ থেকে পড়াশোনা করি।
আমার কলেজের পাশেই অধরার কলেজ।
.
অধরা কে আমি অনেক দিন ধরে ফলো করছি।
ফলো না করে উপায় আছে ওকে যেদিন
প্রথম দেখি সেদিনই ক্রাশ খেয়ে ছিলাম
ওর দুটি চোখের উপর।ইয়া বড় চশমা পড়ে
থাকে, আর চোখের শান্ত চাহনি আমাকে
পাগল করে দিয়েছিলো।খুবই চঞ্চল, কথাও খুব একটা কম বলে না।
যে কেউ ক্রাশ খাবে।যখন আমি অধরা
কে ফলো করি ও প্রায়ই সময় আড় চোখ দিয়ে
আমার দিকে তাকায়।সেই পাগল করা
চাহনি আমার শরীরের ভেতর যেনো
সত্যপ্রবাহ সৃষ্টি করে।
.
আজকালকার পোলাদের বিশ্বাস নাই কে
কখন ঝোপের আড়াল থেকে এসে প্রপোজ
করে বসবে তাই সুযোগ বুঝে আমিই কামটা
সেরে ফেললাম।এখন অনেক হালকা লাগছে
নিজের কাছে।
.
এখন রাত ১০ টা বাজে,তাই এখন ফোন দেয়া
যেতেই পারে।
----হ্যালো (আমি)
----হ্যালো কে বলছেন। (ঐ পাশ থেকে বয়স্ক
কন্ঠে)
কন্ঠটা শুনেই ফোনটা কেটে দিলাম।বুকটার
হার্ডবির্ড যেনো ২০০ পর্যন্ত উঠে
গেছে,এই বুঝি বের হয়ে যাবে। অধরা কে
দেখে তো এমন মনে হয় না যে এমন করবে
আমার সাথে।নিশ্চয়ই ভুল তুলছি নাম্বার
টা।
.
কিছুহ্মন পর আবার দিলাম,
----হ্যালো (আমি)
----হ্যা কে বলছেন। (ঐ পাশ থেকে বয়্স্ক
কন্ঠে।
নাহ আবার সেই লোকটা।ফোনের পাশেই
সারারাত বসে পাহাড়া দেয় নাকি ফোন
টা।খুবই রাগ উঠছে অধরার উপর।কাল কে একটু
ঝাড়ি মারতে হবে।তাতে যা হবার হবে।
.
অধরা নাম্বার দিছে এই কথা বন্ধুদের
বলাতে ওরা আমার পকেট খালি করছে।
দেখতেছি ওদের কে।
---ঐ তোরা যা খাইছিস সেই খাবার ফেরত
দে আর না হয় টাকা ফেরত দে।
(একটু রাগ দেখিয়ে কইলাম)
----কেন কী হইছে দোস? (বন্ধুরা)
----অধরা আমারে ভুল নাম্বার দিছে।
কথাটা বলাতে সবাই হেসে উঠলো।
---ঐ তোরা থামবি,রাগ করেই ওদের সামনে
থেকে চলে আসলাম।রাগ তো আমার সেই
উঠছে।তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করলাম।
.
পরের দিন,,
----এই যে শুনুন? (আমি)
----জি বলুন। (অধরা)
----গতকালকে আমাকে আপনি ভুল নাম্বার
দিছেন কেন?
----তাই নাকি কিভাবে বুঝলেন।
----গতরাতে আমি সেই নাম্বারে ফোন
দিছিলাম।
---ও আচ্ছা,তো কী কথা হলো।
----কী কথা হবে মানে,একটা বয়স্ক লোক
ফোন ধরছিলো আমি ভয় পেয়ে কেটে দিছি।
-----ও আচ্ছা, ঐটা আমার আব্বু ছিলো।
---মানে,
কথাটা শুনেই মনে হলো কেউ আমার মাথায়
ঠাডা ফেলছে।
----জি,আসলে আমার মা নেই,বাবাই
সব,বাবার কাছে সব কিছু শেয়ার করি, তাই
আপনি যে আমাকে ভালবাসেন সেটাই বা
বাদ রাখি কেমনে।
---এই মেয়ে পাগল নাকি।আচ্ছা আপনার কী
পাগলের বংশ নাকি।প্রেমের কথা কেউ
বাবা কে বলে।
----কেনো বললে কী সম্যসা?
----আচ্ছা তাহলে আমি গেলাম।
----কেনো আমাকে ভালবাসে না? (নরম
কন্ঠে বলল অধরা)
----হুম বাসি তো।
----তাহলে চলে যেতে চাইছেন যে।
----আমার মনে হয় তুমি আমাকে ভালবাসো
না।(এই প্রথম ওকে তুমি করে বললাম)
---কখন বললাম যে ভালোবাসি না।
---বলা লাগবে না বুঝে ফেলেছি।
---কচু বুঝেছো,
কথাটা বলেই অধরা দুষ্টুমির হাসি হাসতে
থাকলো।যার মানে আমি বুঝতেছি না।
---চলো আমার সাথে।(অধরাও তুমি করে
বলছে আমাকে)
---কোথায় যাবো?
---জাহান্নামে ,, কেন যাইবা না?
---না মানে,প্রেম করতে পারলাম না এখনো
তাই জাহান্নামে যেতে মন চাইছে না।
---জাহান্নামে গিয়ে প্রেম করবা বুঝছো।
এবার চলো।
---এই খোলা পার্কে কেনো?
---গাধারাম বুঝো না কিছু।
---কী বুঝবো।
----এবার আমাকে প্রপোজ করো।
----করলাম তো গতকাল।
----সেটা হবে না, আজ কে আবার করো।
 ----আমার হাতে তো কোন ফুল
নেই,আশেপাশেও পাওয়া যাবে বলে মনে
হয় না।
---লাগবে না এভাবেই বলো।
---আমি হাটু গেরে ওর হাতটা ধরে বললাম
will you marry me?
---হয়নি।চশমাটা নাকের কাছে এনে বলল অধরা।
---কী হয় নি?
---প্রপোজ আবার করো।
---এবার আমি দুই হাত মেলিয়ে দিয়ে
চিৎকার করে বললাম আই লাভ ইউ অধরা।
---এতো চিৎকার করতে কে বলছে, শুধু আমি
শুনলেই হবে।ভালভাবে প্রপোজ করো।মুখ
বাকিয়ে হাসতে শুরু করল অধরা।
---কী মেয়েরে বাবা,ছেড়ে দেও না।
---ওকে লাগবে না প্রপোজ করা,আমি
যাইতেছি।
---না,না,বলতেছি,একটু ভেবে নিয়ে বললাম-
তুমি কী আমার এই মনের ছোট্র ঘরের
মালকীনি হবে,যেখানে শুধু তুমি বসবাস
করবে।
----অধরা কথাটা শুনেই মুচকি মুচকি হাসতে
শুরু করল।এবার তুমি বলো।
---আমি কি বলব,আমি কিছু বলতে পারবো
না।
---আচ্ছা তাহলে আমি যাইতেছি।
পিছন থেকে অধরা বলতে শুরু করলো।
---জানো মনে মনে ভাবতাম কে আছে যে
আমাকে ভালবাসবে, শাসন করবে,কেয়ার
করবে।যখন তুমি আমাকে ফলো করতে তখন
আমার মনে হতো আমার চারপাশের সব
কিছুই নতুন রূপ ধারন করেছে,অনেক ভাল
লাগতো নিজের কাছে।একদিন যখন তুমি
আসোনি সেদিন বাড়ীতে গিয়ে অনেক
কেদেছিলাম। এরই নাম যদি ভালবাসা হয়
তাহলে আমি তোমাকে ভালবাসি।
(কথা গুলো কান্না মিশ্রিত কন্ঠে
একনাগারে বলল অধরা)
আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে
পারলাম,অধরাকে নিজের বুকের মধ্যে নিয়ে
বললাম।
----আমি আছি তো, সব সময় তোমার পাশে
থাকবো,তোমার সাথে থাকবো কেয়ার
করবো।
----মাঝ পথে ছেড়ে যাবে না তো? (অধরা)
----কখনোই ছেড়ে যাবো না আমার পাগলী
টা কে। (আমি)
----আর প্রতিদিন ফলো করবা তাহলে
আমাকে।
----এখনো ফলো করবো।
----হ্যা ফলো না করলে কিন্তু কান ধরে
উঠবোস করাবো।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.